আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসি ইসাম বারকাওয়ি: সুপরিচিত এক বিপ্লবী লেলিনবাদী তাকফিরির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত

সালাফি দাওয়াহ বাংলা


বু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসি ইসাম বারকাওয়ি সাইয়িদ কুতুবের পরবর্তী রচনাবলির মাধ্যমে বিকশিত হওয়া ২০শ ও ২১শ শতাব্দীর লেনিনবাদী তাকফিরি আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, যাতে সে “জাহিলি” (বর্বর, অন্যায় সমাজ) সমাজ থেকে “আল্লাহর হাকিমিয়্যাহ কেড়ে নিয়ে” তা “আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার” মাধ্যম হিসেবে ‘লেনিনিস্ট ম্যানিফেস্টো (Leninist Manifesto)’ রচনা করে। তার মতে, এসব সমাজ আল্লাহর হাকিমিয়্যাহ (সার্বভৌম অধিকার) অবৈধভাবে দখল করে আছে। কুতুবের লেনিনবাদী পদ্ধতিগত কাঠামো সম্পর্কে আরও জানতে এই নিবন্ধটি দেখুন।

এই বিপ্লবী মতাদর্শই বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে মিশর থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে পশ্চিমা বিশ্ব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বিপ্লবী আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে। এসবের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মূলত মুসলিম সমাজে, এবং পরবর্তীতে অমুসলিম অঞ্চলে “জিহাদ”-এর একটি ভ্রষ্ট ও নব উদ্ভাবিত ব্যাখ্যার প্রচলন। এ প্রসঙ্গে আরও জানতে এই নিবন্ধটি দেখুন

এই নিবন্ধে আমরা শুধুমাত্র পাঠকদেরকে তাকফিরি ও তাদের আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের চারিত্রিক ধরন বুঝতে সাহায্য করার উদ্দেশে আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসি সম্পর্কে কিছু তথ্য উল্লেখ করবো। আপনি দেখবেন যে এরা ন্যূনতম শালীনতা, সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার মতো গুণাবলি থেকেও বঞ্চিত। আইরনি হচ্ছে, এই মানুষগুলোই “ইসলামের সেবক” হওয়ার দাবি করে, অথচ ইসলামের মৌলিক নীতি-নৈতিকতা থেকে তারা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

তথ্যসূত্র


তথ্যসূত্র হলো একটি গ্রন্থ, যার ভূমিকা লিখেছেন শাইখ সালিহ আল-ফাওযান। এটি আল-মাকদিসি রচিত বইয়ের খণ্ডন হিসেবে লেখা হয়েছে, যেখানে আল-মাকদিসি সৌদি রাষ্ট্রকে তাকফির (কাফির ঘোষণা) করার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে। “তাবদিদ কাওয়াশিফ আল-আনিদ ফি তাকফিরি লি দাওলাতিত তাওহিদ ” শীর্ষক এই গ্রন্থটি মাকদিসির “আল-কাওয়াশিফ আল-জালিয়্যাহ” নামক বইয়ের প্রত্যুত্তরে রচিত। এতে কুয়েতে কিছুকাল অবস্থানকারী আল-মাকদিসির সাথে সরাসরি সান্নিধ্য ও যোগাযোগ থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

২০শ শতাব্দীর লেনিনবাদী তাকফিরি বিপ্লবীদের আদর্শিক উৎস


এই তথ্য সংক্ষেপে উপস্থাপনের আগে একটি বিষয় স্পষ্ট করা জরুরি: প্রতারণামূলকভাবে ইসলামের নামে সংঘটিত সমসাময়িক সকল চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মূলে রয়েছে সেই ঘৃণা, আক্রোশ ও বিদ্বেষপূর্ণ মতাদর্শ, যা সাইয়িদ কুতুব ১৯৫০-এর দশকের শেষভাগ থেকে ১৯৬০-এর মধ্যভাগে তাঁর লেখালেখিতে মুসলিম সমাজগুলোকে “মুরতাদ” (ধর্মত্যাগী) আখ্যা দিয়ে বিকশিত করেছিল। সালাহ আল-খালিদি রচিত কুতুবের জীবনী, (من الميلاد إلى الإستشهاد) “জন্ম থেকে শাহাদাহ” অনুসারে, কুতুব প্রায় ১৫ বছর ধরে পশ্চিমা বস্তুবাদী দর্শনে (Materialist Philosophy) প্রভাবিত ছিল (পৃষ্ঠা ২১৩-২১৫)। এই সময়কে তার জীবনের “অপচয়ের যুগ” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সে বিশেষভাবে মার্ক্সবাদী সমাজতন্ত্র (Marxist Socialism) দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়। এছাড়াও, সে অ্যালেক্সিস ক্যারেলের “বারবারিজম (বর্বরতা)” সংক্রান্ত ধারণায় প্রভাবিত হয় যা তার পরবর্তী লেখালেখিতে আবু আলা মাওদুদির রচনার সমর্থনে এ ধারণাগুলোকে আরও উন্নীত করার ক্ষেত্রে প্রিকার্সর হিসেবে কাজ করে। ১৯৫২ সালের সফল জুলাই বিপ্লবে ফ্রি অফিসার্সদের সাথে মিশরে জামাল আব্দুল নাসেরের ক্ষমতাদখলের চক্রান্তে কুতুবের ভূমিকা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে কুতুবের পক্ষে তার লেখা “মাইলস্টোনস” ও “আয-যিলাল”-এর মতো গ্রন্থে তার লেনিনবাদী এই মতাদর্শকে সুসংহতভাবে উপস্থাপন করা সহজ হয়।

এই প্রভাবগুলোর মাধ্যমে কুতুব সমকালীন সকল মুসলিম সমাজকে “মুরতাদ” (ধর্মত্যাগী) সমাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল—যেখানে কেবল সে নিজে এবং তার বিশেষ এই মতাদর্শে বিশ্বাসীরাই ব্যতিক্রম (এ বিষয়ে আরও জানতে এখানে দেখুন)। এসব অঞ্চলে সে সহিংস, ধ্বংসাত্মক (লেনিনবাদী) বিপ্লবের ডাক দিয়েছিল (এখানে দেখুন)। এর ফলস্বরূপ জিহাদের একটি ভ্রষ্ট ও বিকৃত ব্যাখ্যার জন্ম হয় (এ বিষয়ে জানতে এখানে ক্লিক করুন), এবং এই মতাদর্শই আধুনিক চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের ভিত্তি তৈরি করে। সন্ত্রাসবাদের মতাদর্শিক যৌক্তিকতার শেকড় এধরনের চিন্তাধারায় প্রোথিত, এবং এর লক্ষ্যবস্তু মূলত “মুরতাদ” হিসেবে চিহ্নিত মুসলিম সমাজ। অনেক অমুসলিম এটা বুঝতে পারে না যে, এই লেনিনবাদী তাকফিরি বিপ্লবীদের মতে, এসব “মুরতাদ” সমাজ, তাদের শাসক, সরকার এবং সমর্থকরাই লড়াই, হত্যা ও উৎখাতের প্রধান লক্ষ্য। “মুরতাদ” মুসলিমদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে লড়াই করা—এটিই তাদের মতাদর্শিক বিশ্বাস, যা তারা তাদের লেখালেখিতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করে। এটা তাদের “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক লক্ষ্য”, যা ঘটনাক্রমে তাদেরকে একইসাথে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির একটি আদর্শ হাতিয়ারেও পরিণত করেছে। এই মতাদর্শের বলেই আবু কাতাদাহর মতো দোপায়া জানোয়ারেরা আলজেরিয়ায় মুসলিম নারী ও শিশু হত্যার বৈধতায় ফাতওয়া প্রদান করেছিল (এখানেএখানে দেখুন)।

আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসি ও তাকফিরের চরমপন্থি মতবাদ


উল্লিখিত গ্রন্থ থেকে সংক্ষেপিত ও সংযোজিত (পৃষ্ঠা ১৬-২৬):

আল-মাকদিসির পুরো নাম আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসি ইসাম বিন তাহির আল-বারকাওয়ি। ধারণা করা হয়, সে সার্কাসিয়ান (Circassian) বংশোদ্ভূত এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে প্যালেস্টাইনে অভিবাসিত হয়। যৌবনের শুরুতে সে কুয়েতে বসবাস করতো এবং ফুয়াদ আর-রিফাঈর সাথে “মাকতাবাহ আস-সাহাবাহ” প্রকাশনীতে কাজ করতো। এই প্রকাশনী প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে সে সেখানে যুক্ত ছিল। পরে ফুয়াদকে ছেড়ে সে স্বাধীনভাবে কিছু ফ্রিল্যান্স কাজ শুরু করে এবং কুয়েতের সাবাহিয়্যাহ এলাকায় বসবাস করে।

১৯৮৬ সালে, এক বছর পর, সে আফগানিস্তান চলে যায় এবং তাকফিরি জঙ্গিদের সাথে যুক্ত হয় এবং “জামাআতুত তাকফির”-এর কাছে প্রশিক্ষণ নেয়। কুয়েতে ফিরে আসার পর তার মধ্যে এই নতুন মতাদর্শের প্রভাব স্পষ্ট হতে থাকে। এই মতাদর্শের কারণে তার প্রকৃত বিশ্বাসকে লুকানোর জন্য তাকিয়্যাহ (কপটতা) পদ্ধতি ব্যবহারের লক্ষণ দেখা যায়। সে কারও সাথে কথোপকথনে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতো যাতে ঐ ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারে, এবং যদি কেউ তার বক্তব্যের সাথে একমত হতো, তখন সে নিজের প্রকৃত মতবাদ প্রকাশ করতো। অন্যথায়, সে বলতো, “আমি তোমার সাথে মজা করছি।”

এভাবেই তার পরিবর্তনের সূচনা হয়। এর আগে সে (কুয়েতের) খাইতান এলাকায় মুহাম্মাদ সুরুরের অধীনে অধ্যয়ন করেছিল এবং নিজের বই “ইদাদ আল-কিয়াদাহ আল-ফাওয়ারিস ফি বায়ান ফাসাদ আল-মাদারিস”-এ স্বীকার করেছে যে সে সুরুরের জামাআতের একজন সদস্য ছিল।

আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসার পর সে কুয়েতে জুহাইমানের জামাআতের অবশিষ্ট কিছু সদস্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। এরা ইলম অর্জনের চেয়ে শাসকদের ব্যাপারে কথাবার্তা, তাদের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়া এবং বন্ধুত্ব ও শত্রুতার (আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা) ক্ষেত্রে আল-ইখওয়ান আল-মুসলিমিনের সাথে এক হয়ে সালাফিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়াকেই প্রাধান্য দিতো—যাদেরকে তারা “সরকারের দালাল” বলে অপবাদ দিতো।

পরবর্তীতে আল-মাকদিসি মুহাম্মাদ সুরুর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সুরুরের বিরুদ্ধে একটি খণ্ডনমূলক গ্রন্থও রচনা করে। কারণ, সুরুর “জামাআতুত তাওয়াক্কুফ” (আরেকটি তাকফিরি দল)-এর বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছিল। এসময়ে আল-মাকদিসি “মিল্লাতে ইব্রাহিম ” নামে একটি বই লিখে, যা মূলত খারিজি মতবাদের রূপরেখা তুলে ধরে। এরপর সে “আল-কাওয়াশিফ আল-জালিয়্যাহ ফি বায়ান কুফর আদ-দাওলাহ আস-সাউদিয়্যাহ ” নামক আরেকটি বই লিখে, যেটায় সে “আবু আল-বারা আল-উতাইবি” ছদ্মনাম ব্যবহার করে। এছাড়াও সে “আদ-দিমুকরাতিয়্যাহ দ্বীনুন” এবং “মুরজিআতুল আসর ” শীর্ষক দুটি বই রচনা করে।

আমাদের নোট: ১৯৯০-এর দশক থেকেই তাকফিরি মহলে যারা শাসকদের তাকফির করতো না তাদের বিরুদ্ধে ইরজার অপবাদ চালু ও প্রচারিত হচ্ছিল। এই দলগুলো ইবনু বায, ইবনু উসাইমিন ও আল-আলবানির মতো প্রখ্যাত উলামাদেরকেও একারণে মুরজিয়া হিসেবে অভিযুক্ত করতো।

পরে সে কুয়েতে জুহাইমানের জামাআতের অবশিষ্ট সদস্যদের কাছ থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়। কারণ, শরিয়াহর বিরোধিতার যেকোনো ধরনের ভিত্তিতে তাকফির করতে সে এতোটাই তাড়াহুড়ো করতো যে তারা তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেয়। এরপর সে তাদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নেয় এবং একটি ছোট পুস্তিকা লিখে যেটাতে তাদেরকে “তাওয়াগিত সিগার” (ছোট তাগুত) বলে আখ্যায়িত করে। এরপর সে গুলাতুত তাকফির, চরমপন্থি তাকফিরি দলগুলোর সাথে যুক্ত হয়, আর তারা কখনোই মুসলিমদের সাথে মাসজিদে সালাত আদায় করতো না, বরং জুমার সালাতের জন্য মরুভূমিতে গিয়ে নিজেদের মতো করে আলাদাভাবে সালাত পড়তো।

আল-মাকদিসি ইলমি কোনো ব্যক্তিত্ব নয়, তার অধিকাংশ ইলমই এসেছে মুহাম্মাদ সুরুরের কাছ থেকে, যা মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ইলম এবং কীভাবে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা যায় তা নিয়েই সীমাবদ্ধ ছিল।

কুয়েতে থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় যুবকদের ওপর তার কোনো প্রভাব পড়েনি। কারণ, কুয়েতে তখন উলামাদের সাথে দৃঢ় সম্পৃক্ততা বিদ্যমান ছিল। তার সঙ্গী-সাথীরা মূলত সেখানকার ফিলিস্তিনি ছিল, যারা তাদের মতাদর্শ প্রচার করতে ব্যর্থ হয়। কুয়েতে তাকফিরি ও কুতুবিরা প্রকাশ্যে শাসকদের তাকফির বা বিপ্লবের ডাক দিতে পারে না। বরং ইঙ্গিত, পরোক্ষ বক্তব্য ও অনুরূপ কৌশলের মাধ্যমে তারা তাদের লক্ষ্য এগিয়ে নেয়। তবে কুয়েতে সালাফিয়্যাহর শক্তিশালী অবস্থানের কারণে এই দলগুলোর প্রভাব সীমিত হয়ে আছে।

আফগানিস্তানের তাকফিরি দলগুলো থেকে অর্জিত তার মতাদর্শ পরিপক্বতা লাভ করে যখন সে সম্পদ চুরিকে বৈধতা দান করার অবস্থান গ্রহণ করতে শুরু করে (এর কারণ, সব সরকার ও রাষ্ট্র “মুরতাদ” হয়ে গেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ বৈধ, এই যুক্তিতে সে “গনিমতের মাল” হিসেবে সকল সরকারি সম্পদ দখলকে বৈধ মনে করতো)। একবার সে কুয়েতের একটি দাতব্য সংস্থা থেকে কিছু অর্থ চুরি করে জর্ডানে পালিয়ে যায়। সেখানে সে একটি বাড়ি নির্মাণ করে এবং পুনরায় বিয়ে করে। তবে জর্ডান কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেফতার করে। সে সাত বছর কারাভোগের পর মুক্তি পায়, আবারও কারাবন্দি হয় এবং পরবর্তীতে আবারও মুক্তি লাভ করে।

আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসির অভিমত ও কার্যকলাপ


লেখক নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ফয়সাল বিন খালিদ আস-সাঈদের একটি চিঠি থেকে উদ্ধৃত করেছেন, যেখানে তিনি আল-মাকদিসির কাছ থেকে সরাসরি নিজ কানে শোনা কথা এবং তার সাথে আলোচনা ও বিতর্কে প্রাপ্ত বিষয়াবলি উল্লেখ করেছেন – এবং ইহসান আল-উতাইবি নামক আরেকজন ব্যক্তির কথাও লেখক উল্লেখ করেছেন (সংক্ষিপ্ত):

  • ফয়সাল আস-সাঈদ বর্ণনা করেন যে, আল-মাকদিসি (কুয়েতি) সেনাবাহিনীতে কর্মরত ব্যক্তিদের কেবল সামরিক ইউনিফর্ম পরার কারণে মুরতাদ বলে ঘোষণা করে, অথচ তার কিছু অনুসারী নিজেরাই সেই সেনাবাহিনীর অফিসার!
  • আল-মাকদিসি গাড়িতে মাতাল অবস্থায় পাওয়া (কুয়েতি) এক সৈনিকের ওয়ালেট ও অস্ত্র চুরি করেছিল। ফয়সাল আস-সাঈদ তাকে নিজ গাড়িতে করে ড্রাইভে নিয়ে যাওয়ার পর এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আল-মাকদিসি প্রথমে অস্বীকার করে, কিন্তু শেষে স্বীকার করে। যখন তাকে শরিয়াহর জাস্টিফিকেশন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় যে এই অপরাধের পেছনে তার দলিল কী, এবং কোনো উত্তর না পেয়ে ফয়সাল তাকে বলেন, “তাহলে এটা তাদের ওপর আপনার নিজস্ব হুকুম ও ফাতওয়ার ভিত্তিতে”, এরপর আল-মাকদিসি জবাব দেয়, “কারণ, সে তাগুত ও কাফির।” জিজ্ঞেস করা হলো কেন সে ঐ সৈনিককে তাকফির করলো, কিছুক্ষণ ঘোরানোর পর আল-মাকদিসি বললো, “তার সামরিক পোশাক এবং মদপানের কারণে।”
  • সে শাইখ ইবনু বায ও শাইখ ইবনু উসাইমিনকে আক্রমণের জন্য পরিচিত, তাঁদেরকে বিপথগামী, পথভ্রষ্ট ও অন্যকে পথভ্রষ্টকারী বলে মনে করে।
  • ইহসান আল-উতাইবির বর্ণনায়: আল-মাকদিসি মুসলিমদের পেছনে সালাত পড়তো না, এবং ওজুর স্থানে সময় নষ্ট করে সালাত শেষ হওয়ার পর (একা একা) সালাত পড়তে বের হতো। [এটি তার এই বিশ্বাসের কারণে যে, ইমাম মুরতাদ, তাই সালাত শুদ্ধ হবে না]।
  • আল-উতাইবির মতে: আল-মাকদিসি (সৌদি আরবের) আল-হুযাইফি ও আস-সুদাইসের পেছনে সালাত পড়াকে হারাম মনে করতো।
  • আল-উতাইবি আরও উল্লেখ করেন: আল-মাকদিসি পুলিশ অফিসারদের সম্পদ চুরি করা জায়েয মনে করতো এবং সে নিজে এক মুসলিম পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে চুরি করেছিল (যা ফয়সাল আস-সাঈদের পূর্বের বক্তব্যের সাথে মিলে যায়)।
  • আল-উতাইবির বর্ণনায়: আল-মাকদিসি মুসলিম নারীদের সম্মানহানিকে জায়েয মনে করে, কারণ তাদেরকে গনিমত (যুদ্ধলব্ধ সম্পত্তি) হিসেবে গণ্য করা হয়—যা আল-মাকদিসির তাদেরকে তাকফির করা থেকে উৎসারিত হয়।

দেখতে পাচ্ছেন, এটি মূলত ১৯৬০-এর দশকের মিশরে সাইয়িদ কুতুবের বই ও মতাদর্শ থেকে উৎসারিত সেই একই বিষবৃক্ষ। এই শয়তানিমূলক ও নব উদ্ভাবিত তথাকথিত “জিহাদ” (যা আসলে শয়তানের পথে জিহাদ) সম্পর্কে আরও জানতে আপনি এই নিবন্ধটি পড়তে পারেন।

এই সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে স্পষ্ট হয় যে আমরা এখানে প্রধানত এমন একদল লোকদেরকে নিয়ে কাজ করছি যারা দোপায়া পশুর চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে নবি মুহাম্মাদ () এই খারিজিদেরকে “জাহান্নামের কুকুর ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি তাদের সম্পর্কে বলেছেন, “যদি আমি তাদের পেতাম, তবে আদ (জাতির) মতো করে তাদেরকে হত্যা করতাম।”


সোর্স: takfiris.com
পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোনো কমেন্ট নেই
কমেন্ট করুন
comment url